সারা দেশের জলাশয় চিহ্নিত করে দেশি মাছ রক্ষার আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টার
সারা দেশের
জলাশয় চিহ্নিত করে দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য
ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন জলাশয়ে
নানান প্রজাতির মাছ রয়েছে। এসব জলাশয় চিহ্নিত করে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি
করতে হবে।
আজ বুধবার সকালে
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে আয়োজিত ‘টেকসই মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনায় অভয়াশ্রমের
গুরুত্ব ও ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)।
সভায় বিএফআরআইর
মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, সম্মানিত অতিথি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান
ফারাহ শাম্মী ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
করেন বিএফআরআইর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মশিউর রহমান।
ফরিদা আখতার
বলেন, মুক্ত জলাশয়ের পরিমাণ দিন দিন কমছে, ফলে মাছের প্রজাতি জিনগত বিলুপ্তির ঝুঁকিতে
পড়ছে। তিনি বলেন, দেশে একসময় ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছিল। গবেষণার মাধ্যমে তার
মধ্যে ৪১ প্রজাতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। মাছের প্রজাতি সংরক্ষণ শুধু বাংলাদেশের জন্য
নয়, আন্তর্জাতিক মৎস্যসম্পদের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
মাছ শিকারে
বিষ ও বিদ্যুতের ব্যবহার এবং পানিদূষণ ও প্লাস্টিকদূষণকে তিনি মৎস্যসম্পদের জন্য বড়
হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে
ড. মো. মশিউর রহমান জানান, দেশে বর্তমানে ৬৬৯টি অভয়াশ্রম রয়েছে, যার আয়তন ১ হাজার ১৬৯
হেক্টর। গত ছয় বছরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৭.৪১ লাখ মেট্রিক টন।
সচিব মো. তোফাজ্জেল
হোসেন বলেন, আইন সংশোধনের ফলে এখন মন্ত্রণালয় নিজেই অভয়াশ্রম ঘোষণা করতে পারবে। তিনি
জানান, অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে শুধু মাছ নয়, পুরো জলজ প্রতিবেশ
সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা সম্ভব।
ফারাহ শাম্মী
বলেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। তাই সেখানে দ্রুত অভয়াশ্রম গড়ে তোলার
বিকল্প নেই।
মহাপরিচালক
ড. মো. আব্দুর রউফ জানান, অভয়াশ্রমের ফলে হাকালুকি হাওরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। সাগরে
৫৮ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখায় পাঙ্গাশসহ অন্যান্য মাছের প্রজননও বেড়েছে।