কর ছাড় পাচ্ছে পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক
দেশের শেয়ারবাজারে প্রাণ
ফেরাতে আসছে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য বেশ কিছু সুখবর। আজ
সোমবার (০২ জুন) পেশ করা হবে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। বাজেটে ব্রোকারেজ
হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি ভালো কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত
হতে উৎসাহিত করতে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্পোরেট করের
ব্যবধান বাড়ানোর প্রস্তাবও থাকছে।
লেনদেন কর কমছে,
স্বস্তিতে ব্রোকারেজ হাউস
বাজেটে শেয়ার লেনদেনের
ওপর উৎসে কর বর্তমান ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকতে পারে।
এই দাবিটি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিল ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
(ডিবিএ)। এ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কর হ্রাসের ফলে বিশেষ করে
ক্ষতিগ্রস্ত ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকারেজ হাউসগুলো কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
বর্তমানে লোকসান থাকলেও কর দিতে হয়, যা অনেকের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলেছে।
মার্চেন্ট ব্যাংকের কর
হার কমার সম্ভাবনা
বাজেটে মার্চেন্ট
ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট কর হার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার
প্রস্তাব থাকতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের
(বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন জানান, প্রচলিত ব্যাংকের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন
কার্যক্রম পরিচালনা করলেও একই হারে কর দিতে হচ্ছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে। তার
মতে, কর কমলে প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণা ও বাজার উন্নয়নে বেশি খরচ করতে পারবে, যা
ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে সহায়তা করবে।
তালিকাভুক্তিতে উৎসাহ
দিতে কর ব্যবধান বাড়ানো হচ্ছে
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে
জানা গেছে, তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির কর্পোরেট করের মধ্যে ব্যবধান
পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে সাত শতাংশ করা হতে পারে। এর মাধ্যমে ভালো মানের
কোম্পানিকে বাজারে তালিকাভুক্ত করতে উৎসাহ দেওয়া হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে
তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২২.৫ শতাংশ রাখা হচ্ছে। যদি কোম্পানির পুরো লেনদেন
ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে হয়, তবে তা আরও কমে ২০ শতাংশে নামবে। অন্যদিকে,
তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির কর হার ২৭.৫ শতাংশই থাকবে, যা আগামী দুই অর্থবছরেও
পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট দুটি শর্ত (পাঁচ লাখ টাকার
বেশি আয় ও ব্যাংকিং চ্যানেলে সব খরচ) পূরণ করলে এই হার ২৫ শতাংশে নামানো যেতে
পারে।
প্রস্তাবিত বাজেটের এসব
উদ্যোগ বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হতে
পারে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। করের ভার কমানো ও কর ব্যবধান বাড়ানো—এই
দুই উদ্যোগ শেয়ারবাজারে প্রাণ ফেরাতে একটি কার্যকর কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।