বাজেটে থাকছে পুঁজিবাজারের জন্য যে ইতিবাচক খবর
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করবেন। এবারের বাজেটে দেশের
পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে কর ছাড়ে থাকছে বেশ ইতিবাচক পদক্ষেপ।
অর্থ মন্ত্রণালয়
সূত্রে জানা গেছে, বাজেটে সম্ভাব্য মূল প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে: তালিকাভুক্ত
ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর্পোরেট করের ব্যবধান বর্তমানের ৫% থেকে বাড়িয়ে
৭.৫% করা, সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ০.০৫% থেকে কমিয়ে ০.০৩%
করা, এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট করের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে ২৭.৫% করা।
কর্পোরেট
করের ব্যবধান ও লেনদেনের শর্ত শিথিল
শেয়ারবাজারের
কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করতে সরকার বিদ্যমান ৫% কর্পোরেট করের
ব্যবধানকে ৭.৫% এ উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। একইসাথে, হ্রাসকৃত কর হার উপভোগ
করার জন্য বর্তমানে প্রয়োজনীয় লেনদেন শর্তগুলো শিথিল করা হবে।
বর্তমানে
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ২০% কর্পোরেট কর হার উপভোগ করে। তবে কঠোর শর্তের কারণে
অনেক কোম্পানি এই হারে যোগ্য হতে পারে না এবং ২২.৫% কর পরিশোধ করে। একইভাবে
অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট করের হার ২৫% হলেও, শর্ত পূরণ না করার কারণে
তাদের প্রায়শই ২৭.৫% পরিশোধ করতে হয়।
অর্থ
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন বাজেটে অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য
কর্পোরেট কর ২৭.৫% নির্ধারণ করা হতে পারে। একই সাথে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ২০%
হার উপভোগ করার শর্তগুলো শিথিল করা হতে পারে, যার ফলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ৭.৫%
করের ব্যবধান তৈরি হবে।
সিকিউরিটিজ
টার্নওভারের ওপর এআইটি হ্রাস
সরকার
সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর (এআইটি), যা টার্নওভার কর নামে পরিচিত,
০.০৫% থেকে কমিয়ে ০.০৩% করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ব্রোকারেজ ফার্মগুলোর করের
বোঝা কমাতে সাহায্য করবে।
খাত
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে টার্নওভার কর প্রাথমিকভাবে ০.০১৫% নির্ধারণ
করা হয়েছিল। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে সরকার এটি বাড়িয়ে ০.০২৫% করে। এরপর ২০১০ সালের
জুলাইয়ে ০.০৫% এবং ২০১১ সালের জুলাইয়ে ০.১০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। তবে
শেয়ারবাজার পতনের পর ২০১১ সালের অক্টোবরে হারটি কমিয়ে ০.০৫% করা হয়। তখন থেকে
একই হার বজায় রয়েছে।
মার্চেন্ট
ব্যাংকের কর হ্রাস
অর্থ
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট করের
হার ৩৭.৫% থেকে কমিয়ে ২৭.৫% করার প্রস্তাব করা হতে পারে। এটি মার্চেন্ট
ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের দীর্ঘদিনের দাবি, কারণ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বাজারের
মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ কর্পোরেট করের মুখোমুখি হচ্ছিল। এর বিপরীতে
ব্রোকারেজ ফার্ম এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো বর্তমানে ২৭.৫% কর্পোরেট
কর পরিশোধ করে। বর্তমানে দেশে ৬৬টি মার্চেন্ট ব্যাংক রয়েছে, যার প্রায় ৬০%
ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাবসিডিয়ারি।