ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, প্রতিবাদে বিশ্বের শহরে শহরে বিক্ষোভ
ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় শনিবার মধ্যরাতের
পর হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার বিশ্বের বিভিন্ন শহরে
বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইরানের ইরানের তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের
সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশটির
রাজধানীজুড়ে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে
সেখানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
তেহরানের আজাদি স্কয়ার, ফার্দৌসি স্কয়ার, ইমাম
হোমেইনি মসজিদের সামনে এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ছিল প্রধান বিক্ষোভস্থল। তবে
দেশটির বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো করে বিক্ষোভ হয়। তেহরানের আজাদি স্কয়ারে আসেন
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, শিকাগো,
ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলসের মতো বড় শহরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মসূচিকে ‘জরুরি
সমাবেশ’ বলে বর্ণনা করেছেন আয়োজকরা।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু
বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নেয়, কোনোটিতে কয়েক ডজন মানুষ দেখা গেছে।
একাধিক স্থানে বিক্ষোভকারীরা ইরানের পতাকা বহন
করেন। কেউ কেউ সাইনবোর্ড ও ব্যানার ধরে রেখেছিলেন বা সেগুলো বেষ্টনী ও ভবনের গায়ে
লাগিয়ে রাখেন, যেখানে লেখা ছিল ‘ইরানে যুদ্ধ নয়!’
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজের ফটকের বাইরে অন্তত ২০০
জন বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হামলার নিন্দা জানান, যাদের মধ্যে কিছু
যুদ্ধবীরও ছিলেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ২৬ বছর বয়সী নার্স নুর
আবদেল-হাক বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই
তিনি এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য গাজা বা ওয়েস্ট
ব্যাংকে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না; আরও হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলুক।’
ইউএস টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে. যুক্তরাজ্যের
লন্ডনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ঘোষণা দেন, ইরানের
তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করা হয়েছে। এই ঘোষণার পর থেকেই লন্ডনে ইরানি
দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখানে ইরানের পক্ষে ও
বিপক্ষের লোকজন উপস্থিত হন। জমায়েতের ওপর পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এক পর্যায়ে
উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে আট ইরানি নাগরিককে
গ্রেপ্তার করা হয়।
ফ্রান্সের প্যারিসে ইরানে হামলার প্রতিবাদে
বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার
প্রতিবাদ জানান।
নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে ইরানে হামলার প্রতিবাদে
বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ন্যাটো সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। রোববার
বিক্ষোভকারীরা ইরান ও ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে সেখান জড়ো হয়ে মিছিল করেন। ‘ইরান
যুদ্ধ নয়’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের টোকিওর এম্বাসির সামনে প্রতিবাদী
বিক্ষোভ করা হয়। রোববার সেখানে বিভিন্ন কিছু লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের
হামলার প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ হয়েছে। কলকাতায় সোশ্যাল ইউনিটি সেন্টার অফ
ইন্ডিয়া (এসইউসিআই) নেতাকর্মীরা ইরানের ওপর মার্কিন হামলার নিন্দা জানিয়ে
বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন।