জমে উঠেছে লাতিন বনাম ইউরোপ
লাতিন বনাম ইউরোপ– বিশ্বকাপে দেখা যায়
প্রবল দ্বৈরথ। একদিকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-উরুগুয়ে, অন্যদিকে
ফ্রান্স-জার্মানি-স্পেন। একদিকে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের আবেগ, অন্যদিকে আধুনিক ফুটবলের
ঝলকানি। ফুটবলের এ আবেদন এবার ক্লাব বিশ্বকাপেও স্পর্শ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি
ম্যাচেই গ্যালারি মাতাচ্ছেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলোর সমর্থকরা। তাদের
তুলনায় ইউরোপিয়ান দর্শকের খরা আটলান্টা-মায়ামিতে।
অর্থে-প্রতিপত্তিতে লাতিন ক্লাবগুলোর থেকে অনেক
বেশি এগিয়ে ইউরোপের দলগুলো। তার পরও কোথাও গিয়ে যেন মাঠে লাতিনদের সঙ্গে পেরে উঠছে
না তারা। ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব পিএসজিকে বিস্ময়করভাবে দু’দিন
আগে হারিয়ে দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগো। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার রাতে
আরেক ইউরোপিয়ান জায়ান্ট চেলসি ৩-১ গোলে ধরাশায়ী ব্রাজিলের ফ্লেমেঙ্গোর কাছে।
এবারের আসরে ব্রাজিলের চারটি আর আর্জেন্টিনার
দুটি ক্লাব অংশ নিচ্ছে। যার মধ্যে সাও পাওলোর পালমেইরাস, রিও ডি জেনিরোর
ফ্লেমেঙ্গো, ফ্লুমিনেন্স ও বোটাফোগো এখন পর্যন্ত ম্যাচ হারেনি। চমক দেখিয়েছে
আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্স পর্তুগালের বেনফিকার সঙ্গে ড্র করে। যুক্তরাষ্ট্রে
তাদের বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী। ক্লাবের বিশ্বশ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে বরাবরই ইউরোপিয়ানদের
আধিপত্য। সর্বশেষ ১১ আসরের চ্যাম্পিয়ন ইউরোপের কোনো না কোনো ক্লাব। শেষবার ২০১২
সালে ব্রাজিলের করিন্থিয়াস এ আসর জিতেছিল চেলসিকে হারিয়ে। ব্রাজিলের ক্লাবটি
সাকল্যে দুটি আসর জিতেছে। এর বাইরে লাতিন ক্লাবগুলোর মধ্যে ব্রাজিলেরই সাও পাওলো
আর ইন্তারনেসিওনাল একবার করে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
তবে এবারের আসরটি একটু ভিন্ন। সাত ক্লাব থেকে
বেড়ে ৩২ দল নিয়ে শুরু হয়েছে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপ। আগে যেখানে রিয়াল মাদ্রিদ
কিংবা বার্সেলোনা এক সপ্তাহের জন্য এসে দুটি ম্যাচ খেলেই শিরোপা জিতে নিয়ে যেত,
এবার সেটি হচ্ছে না। সাধারণ এই সময়ে ইউরোপের ক্লাবগুলো তাদের ফুটবলারদের ছুটি দিয়ে
থাকে। এবারের রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানসিটি, পিএসজির মতো ক্লাবগুলো বেশ গুরুত্ব দিয়েই
খেলতে এসেছে।
একটি পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে ক্লাব বিশ্বকাপে
খেলতে আসা ইউরোপের দলগুলোর মধ্যে বিদেশি খেলোয়াড় বেশি। যেমন ম্যানচেস্টার সিটিতে
১৫ দেশের খেলোয়াড় রয়েছে! ইন্টার মিলানেও তাই। সেখানে রিভার প্লেটের স্কোয়াডে রয়েছে
মাত্র চার দেশের ফুটবলার। ইউরোপের দলগুলোতে লাতিনদের সংখ্যা বেশি, সে তুলনায় লাতিন
দলে ইউরোপিয়ান ফুটবলারের সংখ্যা হাতেগোনা।