ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভারত ও চীনা শিক্ষার্থীদের মামলা
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা
করেছেন তিন ভারতীয় এবং দুই চীনা শিক্ষার্থী। হাজারো শিক্ষার্থীর এফ-১ ভিসা
বাতিলের ঘটনায় এ মামলা করেছেন তারা। একই অভিযোগে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এবং
অন্যান্য অভিবাসন কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)
শিক্ষার্থীদের পক্ষে নিউ হ্যাম্পশায়ারের মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে এ মামলা দায়ের
করেছে। মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে হাজার হাজার বিদেশি
শিক্ষার্থীর এফ-১ শিক্ষার্থীর মর্যাদা বাতিল করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, মার্চের শেষ দিক থেকে ১৭০টির বেশি
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে অথবা
তাদের আইনি মর্যাদা বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতি এবং স্কুল
কর্মকর্তাদের সঙ্গে আদান-প্রদান করা চিঠিপত্রের পর্যালোচনা অনুসারে এ তথ্য পাওয়া
গেছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা শুধু প্রত্যাবাসন
বা ভিসা বাতিলের হুমকিই নয়, বরং ‘গুরুতর আর্থিক ও শিক্ষাগত সমস্যার’
সম্মুখীন হচ্ছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইনি মর্যাদা বাতিল করার আগে সরকার প্রয়োজনীয়
নোটিশ দেয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন চীনা নাগরিক হাংরুই ঝাং ও
হাওয়াং আন এবং ভারতীয় নাগরিক লিংকিত বাবু গোরেলা, থানুজ কুমার গুম্মাডাভেলি ও
মণিকান্ত পাসুলা। হাংরুইয়ের এফ-১ ভিসা মর্যাদা বাতিলের কারণে তাঁর গবেষণা সহকারীর
পদ বাতিল হয়ে গেছে। হাওয়াং এরই মধ্যে প্রায় সোয়া তিন লাখ ডলার পড়াশোনার পেছনে খরচ
করার পরও তাঁর ডিগ্রি ত্যাগ করতে হতে পারে।
২০ মে গোরেলার ডিগ্রি শেষ করার কথা। কিন্তু বৈধ এফ-১ ভিসা ছাড়া তিনি তা করতে
পারবেন না বা অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের কর্মসূচিতেও অংশ নিতে পারবেন না। ডিগ্রি পেতে
গুম্মাডাভেলি এবং পাসুলার আরও এক সেমিস্টার বাকি।
ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ভিসা নীতি কঠোর করার ফলে
আন্তর্জাতিক ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোর মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ
সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ চীনা ও
ভারতীয়।
বিবিসি জানায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বহু
বিদেশি শিক্ষার্থীর সামাজিক মাধ্যমের টাইমলাইনে বারবার চোখে পড়ছে এক দৃশ্য—
সাদা পোশাকে এজেন্টরা হঠাৎ এসে শিক্ষার্থীদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন ডিটেনশন সেন্টারে।
তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ নেই। বরং ধারণা করা হচ্ছে, এসব শিক্ষার্থীকে
টার্গেট করা হচ্ছে কলেজ ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে জড়িত থাকার
অভিযোগে।
ট্রাম্প প্রশাসন একাধিকবার জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের দেওয়া ভিসা ‘বিশেষ
অধিকার’, যেটি যে কোনো সময় বাতিল করা যেতে পারে। তবে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী,
এই দমন অভিযান শুধু কয়েকজন নন, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এক হাজারের বেশি বিদেশি
শিক্ষার্থী বা সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের ভিসা বাতিল বা আইনি অবস্থান পরিবর্তন করা
হয়েছে বলে জানিয়েছে ইনসাইড হায়ার এডের একটি ট্র্যাকার।