১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস মানেন না, দলে যে ব্যাখ্যা দিলেন ফুয়াদ
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস মানেন না- এমন বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সমালোচনার মুখে তার ওই বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা চায় এবি পার্টি। পরে তিনি নিজের বক্তব্যের বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দলীয় ফোরামে জমা দেন।
দলীয়
সূত্র জানিয়েছে, দলের পক্ষ থেকে
জানতে চাওয়া হয়, ধর্ম এবং
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কে যাওয়া
এবি পার্টির নীতিবিরোধী। দলের কেউ এই
বিষয়ে বিতর্কে জড়াতে পারে না।
দলীয়
সূত্রের দাবি, নোটিশে বলা হয়, আপনি
নিজেও বিজয় দিবসের কর্মসূচি
পালন করেছেন। এখনো করছেন। তারপরও
কেন এ বিষয়ে এই
বক্তব্য দিয়েছেন। দলীয় নোটিশের জবাবে
ব্যারিস্টার ফুয়াদ অবশ্য নিজে বিজয় দিবস
পালন করেন এবং করছেন
এমনটি স্বীকার করে বলেন, তিনি
দিবসটি অস্বীকার করেননি। দলীয় নীতি অনুযায়ী
তিনি রাজনীতি করবেন বলেও অঙ্গীকার করেন।
ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে
কোনো ধরনের বিতর্ক করা যাবে না
দলের পক্ষ থেকে এমন
নির্দেশনা দেওয়া হলে ব্যারিস্টার ফুয়াদ
তা মেনে নিয়েছেন বলে
দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
গত ২১শে ডিসেম্বর সিজিএস
আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমি ১৬ই ডিসেম্বর
মানি না, আমি নতুন
দিবসের খোঁজ করছি। গত
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘ভারতের বিজয়’ উল্লেখ করে যে টুইট
করেছিলেন সে বিষয়টি সামনে
এনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ এই বক্তব্য দিয়েছিলেন।
তার এই বক্তব্য সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা
আসে। অনেকে বলেন, ১৬ই ডিসেম্বর একটি
মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে নতুন
করে বক্তব্য দেওয়া উদ্দেশ্যমূলক।
এ বিষয়ে এবি পার্টির সদস্য
সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, উনার বক্তব্য শুনার
পর আমরা তার কাছে
ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
এ ছাড়া দলীয় নীতির
বিষয়ে আমরা উনাকে নির্দেশনাও
দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ এবং ধর্ম নিয়ে
কোনো বিতর্কে যাবে না আমার
বাংলাদেশ পার্টি। এটি আমাদের দলীয়
নীতি।
উল্লেখ্য,
বিজয় দিবস মানি না-
এমন বক্তব্য দিয়ে ব্যারিস্টার ফুয়াদ
বলেছিলেন, বিষয়টি আলাপ করতে হবে
রাষ্ট্রকে। ১৬ ডিসেম্বরের পরে
কী হয়েছিল- আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা
ছিল, যুদ্ধের পরে আমাদের প্রত্যেকটা
পুলিশ স্টেশনের দখল নিলো ভারত।
ওসি রিপ্লেসমেন্ট করে দিয়েছে ভারতীয়
কর্মকর্তা দিয়ে। ন্যূনতম তিনটি জেলাতে তিনজন ডিসিকে অ্যাপয়েনমেন্ট করা হয়েছে। তাহলে
সেই বাংলাদেশে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়
দিবস হয় কী করে?
আলোচনাটা এই জন্য করছি,
আমাদের রাষ্ট্রসত্তা এখনো তৈরি হয়নি।
এ জন্যই নরেন্দ্র মোদির মতো লোক ১৬
ডিসেম্বর আমাদের মনে করিয়ে দেয়,
কার সঙ্গে কার যুদ্ধ, কে
মরছে আর কে বিজয়ী
হয়েছে।
ফুয়াদ
বলেন, আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠাতারা রাষ্ট্র কী তা তারা
বুঝতে পারেননি। রাজনৈতিক দলগুলো আর্টিকেল ৭ এর মধ্যে
আটকে আছে। এই রাষ্ট্রে
জমিদারি অবস্থা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এখনো চলছে। এখান
থেকে বের হতে হবে।
আমাদের এ দেশের নাগরিক
হতে হবে, বাসিন্দা নয়।